Posts Tagged ‘ জিওফিজিক্যাল সোসাইটি ’

অ্যামাজনের বিস্ময়!

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী আমাজন। দক্ষিণ আমেরিকার প্রায় ৭০ লক্ষ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আাঁাকাবাকা পথে বয়ে চলেছে রহস্যাবৃত আমাজন জঙ্গলের এই নদীটি। কিন্তু শুধু এটুকুই না। আরও অনেক বিস্ময় এতদিন লুকিয়েই রেখেছিল আমাজন। নদীটির ভূমিপৃষ্টের চার কিলোমিটার নিচে আরও বড় আয়তনের একটি নদী বয়ে চলেছে বলে সম্প্রতি এক গবেষণায় দাবি করেছেন ব্রাজিলের বিজ্ঞানীরা। রিও ডি জেনিরোতে গত সপ্তাহে জিওফিজিক্যাল সোসাইটির এক সম্মেলনে এই বিস্ময়কর দাবিটি করেন ব্রাজিলের ন্যাশনাল অবসারভেটরির জিওফিজিক্স বিভাগ।

আমাজন ভূপৃষ্ঠের ৪ কিলোমিটার নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া এই নদীটির নামকরণ করা হয়েছে এই গবেষক দলের প্রধান ভালিয়া হামজার নাম অনুসরণে। নবআবিস্কৃত এই হামজা নদীটি বয়ে চলেছে আমাজনের মতোই পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে। আমাজন ও হামজা, দুই নদীই দৈর্ঘ্যে সমান (৬ হাজার কিলোমিটার) হলেও প্রস্থে অনেক গুন বড় ভূগর্ভস্থ নদীটি। আমাজন প্রবাহিত হয় প্রস্থে ১ কি.মি থেকে ১০০ কি.মির মধ্যে। যেখানে কোথাও কোথাও হামজার প্রস্থ একশ গুনেরও বেশি। প্রায় ২০০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার। ব্রাজিলের আক্রে প্রদেশ থেকে শুরু হয়ে সালিমোস, আমাজোনাস ও মারাজু শাখানদীগুলো দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এই নদীটি। শেষ হয়েছে আটলান্টিক মহাসমুদ্রে। তবে আমাজনের তুলনায় হামজা নদীর পানিপ্রবাহের গতি অনেক ধীর। আমাজন নদীতে পানিপ্রবাহের গতি সেকেন্টে ১,৩৩,০০০ মিটার৩। আর হামজা নদীর গতি সেকেন্ডে ৩,৯০০ মিটার৩।

তেল উত্তোলনের জন্য আমাজন অঞ্চলে স্থাপন করা ২৪১টি অকার্যকর গভীর কুপের তাপমাত্রা তারতম্যের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে সম্প্রতি এই ভূগর্ভস্থ নদীটির সন্ধান পায় ব্রাজিলের জিওফিজিক্স বিভাগ। ১৯৭০ ও ১৯৮০-র দশকে এই কুপগুলো স্থাপন করেছিল দেশটির পেট্রো-কেমিকেল কোম্পানি পেট্রোব্রাস।

আমাজন নদীর মুখগুলোতে লবন সল্পতার কারণ হিসেবে এই হামজা নদীর উপস্থিতিই বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এখনও এই নদীর বৈশিষ্ট্য, প্রকৃতির উপর এর অবদান ইত্যাদি বিষয়ে পরিস্কার করে কিছু বলতে পারছেন না তাঁরা। আমাজনের এই নতুন বিস্ময়ের স্বরুপ বুঝতে আরও তিন/চার বছর সময় লাগতে পারে বলে ধারণা গবেষকদের।— টেলিগ্রাফ