Posts Tagged ‘ আধুনিক পদার্থবিদ্যা ’

সম্ভব হবে সময় পরিভ্রমণ?

আলোর গতির চেয়েও বেশি হতে পারে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরমাণু কণিকার গতি। যুগান্তকারী এই নতুন তত্ত্বটি পাল্টে দিতে পারে আধুনিক পদার্থবিদ্যার গতিপথ। তিন বছরের গবেষণার পর সম্প্রতি এই তথ্যটি জানিয়েছেন ইউরোপের পারমানবিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (সার্ন) বিজ্ঞানীরা। লার্জ হাড্রন কলিডারের মাধ্যমে বিশ্বব্রক্ষান্ডের উত্পত্তি বিষয়ক গবেষণা করতে গিয়ে এই যুগান্তকারী তথ্যটি বের হয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি নিউট্রিনো নামের এই অদৃশ্য পরমাণু কনিকাটি ৭৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে মাত্র ৬০ ন্যানো সেকেন্ডে। আলোর চেয়েও অনেকগুন বেশি গতিতে। এই দাবি সত্যি হলে বিশ্বব্রক্ষান্ডের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে নতুন ধারণা পাওয়া যাবে বলে অনুমান করছেন পদার্থবিজ্ঞানীরা। সেই সঙ্গে সময় পরিভ্রমণের মতো বহু-কল্পিত বিষয়টিও র’প নিতে পারে বাস্তবে।
ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্টিক্যাল ফিজিক্স বিভাগের অধ্যাপক জেফ ফোরশ বলেছেন, ‘সার্নের বিজ্ঞানীদের এই দাবি সত্য হলে আমরা অন্তত তত্ত্বীয়ভাবে হলেও কোন তথ্য অতীতে প্রেরণ করতে পারব। অন্যভাবে বললে বলা যায়, এর মাধ্যমে আমরা অতীত সময়ে পরিভ্রমন করতে পারব। অবশ্য তার মানে এই না যে, আমরা এখনই টাইম মেশিন বানানো শুর’ করছি।’ সার্নের বিজ্ঞানীদের এই দাবি সত্যি হলে গোটা পদার্থবিদ্যার জগতকেই নড়েচড়ে বসতে হবে। ভুল প্রমাণিত হবেন আধুনিক পদার্থবিদ্যার জনক আলবার্ট আইনস্টাইনও। কারণ ১৯০৫ সালে আইনস্টাইন বলেছিলেন যে, আলোর গতি একটা মহাজাগতিক ধ্র’বক এবং কোনকিছুর বেগই এর চেয়ে বেশি না। যুক্তরাষ্ট্রের ফিজিক্স রিসার্চ সেন্টারে কর্মরত প্রফেসর জেনি থমাস বলেছেন, ‘নিউট্রিনোর গতিবেগের এই পরিমাপ সঠিক হলে এর প্রভাব হবে খুবই ব্যাপক।’
তবে সার্নের এই তথ্যটি নিয়ে এখনও সংশয়ে আছেন স্টিফেন হকিংসহ বিশ্বেও অনেক শীর্ষ পদার্থবিজ্ঞানীরা। হকিং বলেছেন, ‘এখনই এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করার মতো পরিস্থিতি আসে নি। আরও অনেক গবেষণা ও নিশ্চিত হওয়ার মতো তথ্য দরকার।’ জ্যোর্তিপদার্থবিজ্ঞানী মার্টিন রিস বলেছেন, ‘যুগান্তকারী কোন দাবি প্রমাণের জন্য অনেক তথ্য-উপাত্ত দরকার। আর এটা নিঃসন্দেহে একটা যুগান্তকারী দাবি।’—রয়টার্স