Posts Tagged ‘ বারাক ওবামা ’

গভর্নমেন্ট শাটডাউন: কী হতে যাচ্ছে আমেরিকায়?

government shutdown, government shutdown 1995, national debt, us debt, us national debt, federal budget

১৭ বছর পর আবারও বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করছে আমেরিকার সরকারব্যবস্থার অচলাবস্থা। গণমাধ্যমের ভাষায় যেটা ‘গভর্নমেন্ট শাটডাউন’। সোমবার মধ্যরাত থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে জাতীয় পার্ক, পরিবেশবিষয়ক সংস্থা, মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা)সহ কেন্দ্রিয় সরকারের বহু সেবাখাত। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান চালু থাকবে আংশিকভাবে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরিরত প্রায় সাত লাখ মানুষকে বিনা বেতনে বাধ্যতামূলক ছুটিতে চলে যেতে হবে। প্রভাব পড়বে মার্কিন অর্থনীতিতেও।
অর্থনীতিবীদরা হিসেব করে দেখেছেন যে, দুই সপ্তাহের অচলাবস্থা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে দিতে পারে ০.৩ শতাংশ। আর যদি এই ‘শাটডাউন’ তিন বা চার সপ্তাহ ধরে চলে তাহলে এটা কমে যাবে ১.৪ শতাংশ। ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে এই অচলাবস্থা স্থায়ী হয়েছিল ২১ দিন। এবারের পরিস্থিতিটা বারাক ওবামা প্রশাসনের জন্য অস্বস্তিকরই হওয়ার কথা। কারণ অদ্ভুত শোনালেও সত্যি যে, বেশ নাজুক অবস্থার মধ্যেই বিশ্বের সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্রটির অর্থনীতি।
সেবাখাতে অর্থ বরাদ্দ সংক্রান্ত বিল অনুমোদন নিয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে না পারায় শুরু হয়েছে এই অচলাবস্থা। ডেমোক্র্যাট আর রিপাবলিকানদের এই রেশারেশি যদি চলতেই থাকে তাহলে খুব দ্রুতই আরও বড় সমস্যার মধ্যে পড়তে পারে মার্কিন সরকার। কারণ এই মাসেই তারা অতিক্রম করে যাবে ‘ঋণ গ্রহণের সর্বশেষ সীমা’। নতুন করে ঋণ গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি না হলে দেশটির অর্থনীতিতে নানামুখী বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আসলে গত ১৯ মে তারিখেই ১৬.৬৯৯ ট্রিলিয়ন ডলারের সর্বশেষ সীমাটি অতিক্রম করা হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগ বিশেষ দক্ষতায় সবকিছু পরিচালিত করে যাচ্ছে। কিন্তু সেটা খুব বেশিদিন সম্ভব হবে না। কংগ্রেস যদি এই ‘ঋণ গ্রহণের সর্বশেষ সীমা’টা বাড়িয়ে না নিতে পারে তাহলে আগামী ১৭ অক্টোবরের পর থেকেই মুদ্রাসংকট শুরু হবে রাজস্ব বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এরপর এতদিন ধরে ধার করা অর্থের সুদ পরিশোধ করার মতো অবস্থাও থাকবে না মার্কিন সরকারের।
যদিও অনেকেই এটাকে খুব বড় সমস্যা হিসেবে নাও দেখতে পারেন। কারণ ১৯৬০ সালের পর থেকে এই ‘ঋণ গ্রহণের সর্বশেষ সীমা’টা বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে ৭৮ বার। কাজেই আরও একবার সেইটা করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়াটা হয়তো খুব বেশি কঠিন হবে না। কিন্তু ঋণ বোঝাটা যে ক্রমশই ফুলেফেঁপে উঠছে, সেটাও আড়াল করার কোনো সুযোগ নেই। আর এবার ধার করা টাকা দিয়েই আগের ঋণগুলোর সুদ পরিশোধ করার সুযোগও আমেরিকা হয়তো পাবে না।

government shutdown, government shutdown 1995, national debt, us debt, us national debt, federal budget
এর আগে কোনোবারই আরও বেশি দেনা করার ন্যায্যতা নিয়ে রাজনৈতিক দরকষাকষি হয়নি, বরং সত্যিকারের বিতর্কটা হয়েছে এটা কোন খাতে বরাদ্দ দেওয়া হবে সেটা নিয়ে। কিন্তু বর্তমানের দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেসে এটা পরিণত হয়েছে গণবিধ্বংসী রাজনৈতিক অস্ত্রে।
সরকারের অচলাবস্থার চেয়ে এই ‘ঋণ গ্রহণের সর্বশেষ সীমা’র বিষয়টিকেই মার্কিন অর্থনীতির জন্য বেশি হুমকি বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। বিশ্বের অন্যতম প্রধান অর্থনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের অর্থনীতিবীদ পল অ্যাশওয়ার্থ বলেছেন, ‘‘ঋণ গ্রহণের সর্বশেষ সীমা’ বাড়িয়ে নেওয়ার বিষয়ে যে আলোচনা হওয়ার কথা, বর্তমান এই অচলবস্থাটা সেটার জন্য খুব ভালো ইঙ্গিত বহন করছে না। নি¤œকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান নেতৃবৃন্দ যেভাবে এই অচলাবস্থা তৈরি করেছে, তাতে ঋণ সংক্রান্ত আলোচনায় তাদের অবস্থানটা খুব বিপদজনকই হবে।’

government shutdown, government shutdown 1995, national debt, us debt, us national debt, federal budget
১৭ অক্টোবর আমেরিকান ট্রেজারির হাতে থাকবে মাত্র ৩০ বিলিয়ন ডলার। সারা দিনে সরকারের সব খরচ বহন করার জন্য যেটা যথেষ্ট না। সাধারণত এক দিনে সরকারের খরচ হয় প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার। তারপরে আসলে কী হবে সেটা এখনো কেউই জানে না। কারণ এরকম অবস্থায় আমেরিকাকে আগে কখনোই পড়তে দেখা যায়নি। সেরকম পরিস্থিতি যে এই ‘গভর্নমেন্ট শাটডাউনের’ চেয়েও খারাপ কিছু হবে, সেটা ইতিমধ্যেই স্বীকার করে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বলেছেন, ‘ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথমবারের মতো ঘটবে। গভর্নমেন্ট শাটডাউনের চেয়ে সেটা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর হবে। সেটা হবে একটা অর্থনৈতিক অচলাবস্থা।’
কাজেই আগামী কয়েক সপ্তাহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর যে পুরো বিশ্ব অর্থনীতিরই কৌতুহলী নজর থাকবে, সেটা সহজেই অনুমান করা যায়।

একটি ভোটের মূল্য ২০ ডলার

আগামী মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আমেরিকার ৫৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আমেরিকার ইতিহাসে এটিই হচ্ছে সবচেয়ে ব্যয়বহুল নির্বাচন। প্রতিবারই একটু করে বাড়তে বাড়তে এবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২.৫ বিলিয়ন ডলার। হিসেব করে দেখা গেছে এতে ভোট প্রতি খরচ দাঁড়ায় ২০ ডলার। কোথায় থেকে আসছে এত টাকা? খরচটাই বা হচ্ছে কোথায়?

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এই ২.৫ বিলিয়ন ডলার আসছে মূলত চারটি উত্স থেকে। নির্বাচনী প্রচারণা চলার সময়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টির কমিটি তহবিল সংগ্রহ করে। এখান থেকে এসেছে ৬৬১ মিলিয়ন ডলার। রিপাবলিকান কমিটি থেকে ৩৬৯ ও ডেমেক্রেটিক কমিটি থেকে ২৯২ মিলিয়ন ডলার। ৭০০ মিলিয়নেরও বেশি ডলার আসে আমেরিকান নাগরিকদের ছোট ছোট অর্থসাহায্য থেকে। বেশিরভাগ সাহায্যই থাকে ২৫০০ ডলারের কম। নির্বাচনী প্রচারণায় সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারবে না এমন গ্রুপগুলোও নির্বাচনী ফলাফল প্রভাবিত করার জন্য অর্থসংগ্রহ করে থাকে। এইসব গ্রুপকে ডাকা হয় ‘সুপার প্যাকস’ নামে। নিজ পছন্দের প্রার্থীকে সহযোগিতা করার জন্য বা প্রতিপক্ষকে সমালোচনার মাধ্যমে আঘাত করার উদ্দেশ্যে তারা এই অর্থ ব্যয় করে থাকে। এবারের নির্বাচনে এই ‘সুপার প্যাকস’ খাত থেকে এসেছে ৬০০ মিলিয়ন ডলার। এর অর্ধেকেরও বেশি অর্থ এসেছে মাত্র এক শতাংশ সাহায্যকারীর কাছ থেকে। আমেরিকার ক্যাসিনো ডেভেলপার শেলডন অ্যাডেলসন ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছেন সবচেয়ে বেশি অর্থ। তাঁর কাছ থেকে এসেছে ৫৪ মিলিয়ন ডলার। বাকি অর্থের উত্স এখন পর্যন্ত থেকে গেছে পুরোটাই অজানা। তথাকথিত ‘সামাজিক উন্নয়ন গ্রুপ’গুলো তাদের অর্থদাতাদের পরিচয় উন্মোচন করতে চায়না। আর তারা নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করতে খরচ করেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই বিপুল অঙ্কের টাকা কোথায় যায়?

আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য সংগ্রহীকৃত এই অর্থের সিংহভাগ খরচ হয় বিজ্ঞাপন নির্মান করতে। উত্তেজনাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতে গত এক মাসে নির্মিত হয়েছে প্রায় তিন লক্ষ টেলিভিশন বিজ্ঞাপন। এগুলোর মধ্যে বারাক ওবামার সমর্থনে ছিল এক লক্ষ ৬০ হাজার ও মিট রমনির সমর্থনে ছিল এক লক্ষ ৪০ হাজার বিজ্ঞাপন।— বিবিসি অনলাইন
A $2.5bn election: Where the money comes from

প্রযুক্তি জগতের পেটেন্ট যুদ্ধ

বর্তমানের প্রযুক্তি জগতে একটা যুদ্ধই শুরু হয়ে গেছে বলা যায়। আর এই যুস্ত্রের প্রধান অস্ত্র হিসেবে গণ্য হচ্ছে মেধাসত্ব আইন বা পেটেন্টকে। ব্যবসায়িকভাবে মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে এই মেধাসত্ত্বের অধিকার। আদর্শিকভাবে, উদ্ভাবকদের স্বীকৃতি প্রদান করাই পেটেন্ট বা মেধাসত্ব আইনের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হলেও বর্তমান প্রযুক্তি দুনিয়ায় এগুলো কাজ করছে গুগল, অ্যাপল, মাইক্রোসফট, ইয়াহুর মতো বড় বড় কর্পোরেশনগুলোর গোলা-বারুদ হিসেবে। আর এই যুদ্ধে খোদ উদ্ভাবনী প্রক্রিয়াটাই সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পেটেন্ট বিশেষজ্ঞরা। বিস্তারিত পড়ুন