দ্বিতীয় সূর্য?!

স্টার ওয়ার্স সিনেমাতে লুক স্কাইওয়াকারকে দেখা গিয়েছিল দুই সূর্যওয়ালা কল্পিত এক গ্রহে। বাস্তবে পৃথিবীর মানুষও পেতে পারেন এ ধরণের বিরল অভিজ্ঞতা।
এ বছরই একটা অভূতপূর্ব বিরল ঘটনার সাক্ষী হতে পারেন পৃথিবীর বাসিন্দারা। প্রত্যক্ষ করতে পারেন দ্বিতীয় সূর্যের উপস্থিতি। ফলে রাতেও টের পাওয়া যাবে সূর্যের উজ্জ্বলতা। কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব? তাহলে কী প্রকৃতির নিয়ম ভেঙে প্রলয়ংকরী কোনো ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে পৃথিবীর বুকে? না, ব্যাপারটা সে রকম কিছু নয়। বিজ্ঞানীদের নতুন একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল অনলাইন জানিয়েছে, বহু দূরে একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় পৃথিবীবাসীর এই বিরল অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বিজ্ঞানীদের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ৬৪০ আলোকবর্ষ দূরে ‘বেটেলগুস’ নামের একটি নক্ষত্র খুব তাড়াতাড়িই প্রচুর শক্তি বিকিরণ করে ধীরে ধীরে ঢলে পড়বে মৃত্যুর কোলে। আর নক্ষত্রটি শক্তি বিকিরণের শেষ মুহূর্তে এমন এক বিস্ফোরণ ঘটাবে যার ফলে প্রায় এক বা দুই সপ্তাহ ধরে পৃথিবীর মানুষ প্রত্যক্ষ করতে পারবে দ্বিতীয় সূর্যের উপস্থিতি। তবে এই ঘটনাটি ঠিক কবে ঘটতে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জ্যোর্তিবিজ্ঞানের নিয়মানুয়ায়ী অনুমান করা হচ্ছে, ‘বেটেলগুস’ অদূর ভবিষ্যতেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। তবে তার মানে এই না যে, আপনাকে এখনই সানগ্লাস কেনার জন্য দৌড়াতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ার সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ব্রাড কারটেল বলেছেন, ‘২০১২ সালের আগেই এই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটতে পারে। নক্ষত্রটি খুব দ্রুতই তার কেন্দ্রের জ্বালানি শক্তি হারাচ্ছে। এই জ্বালানির জন্যই নক্ষত্রটি আলো বিকিরণ করতে পারে। জ্বালানি ভান্ডার শেষ হয়ে গেলে আক্ষরিক অর্থেই এটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কিন্তু পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়ার আগে এটি একটা প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটাবে। এই বিস্ফোরণের ফলে আমরা পৃথিবীতে কয়েক সপ্তাহব্যাপী অবিশ্বাস্য আলোকিত একটা পরিবেশ পাব। তারপর এটা আস্তে আস্তে মিইয়ে যেতে শুরু করবে। এবং একসময় এটিকে আর দেখাই যাবে না।’
নতুন এই বিস্ময়কর খবরে অবশ্য ‘মহাপ্রলয়’, ‘পৃথিবীর শেষ’ ইত্যাদি নানাবিধ জল্পনা-কল্পনায় তোলপাড় হচ্ছে ইন্টারনেট দুনিয়া। মায়ান দিনপঞ্জী অনুয়ায়ী ২০১২ সালেই পৃথিবীতে একটা মহাপ্রলয় হবে, এমন ধারণা আগে থেকেই বেশ চালু আছে। তার ওপর ‘বেটেলগুস’ নামের অর্থ শয়তান, এই তথ্যটি এসব কল্পনায় যোগ করেছে নতুন মাত্রা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এ ধরনের সম্ভাবনা একেবারেই আমল দেননি। তাঁরা বেশ স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন, নক্ষত্রের বিস্ফোরণটা পৃথিবী থেকে এত দূরে হবে যে, তাতে পৃথিবীর কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। ডেইলি মেইল অনলাইন।