Posts Tagged ‘ আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেট ’

পূর্ব বনাম পশ্চিম: যে পুরানকথাগুলো বিভ্রান্ত করে

প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের পুরানকথা নিয়ে চোখ খুলে দেওয়া বক্তৃতা দিয়েছেন দেবদূত পট্টনায়ক। আর তিনি দেখিয়েছেন যে, কিভাবে ঈশ্বর, মৃত্যু, স্বর্গ ইত্যাদি নিয়ে পুরোপুরি ভিন্ন এই দুইটা বিশ্বাসব্যবস্থা আমাদেরকে প্রভাবিত করে এবং প্রায়ই একে অপরের প্রতি ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করে।

পুরানের কার্যাবলী অনুধাবন করতে গেলে, যেটা একজন প্রধান বিশ্বাস অফিসারের করার কথা, আপনাকে শুনতে হবে গণেশ ও কার্তিকের একটা গল্প। গণেশ হচ্ছেন সেই হাতির মাথাওয়ালা দেবতা, যিনি গল্পকারদের অনুলেখক। আর তাঁর ভাই কার্তিক, দেবতাদের সেনাপতি। এই দুই ভাই একদিন একটা দৌড় প্রতিযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তাঁরা গোটা পৃথিবী ঘুরবেন, তিনবার। কার্তিক তাঁর বাহন ময়ুরে চড়ে বসলেন আর মহাদেশ, পাহাড়-সমুদ্র প্রদক্ষিন করতে বেরোলেন। তিনি ঘুরলেন একবার, দুইবার, তিনবার। কিন্তু তাঁর ভাই গণেশ, শুধু তাঁর পিতামাতাকে প্রদক্ষিন করলেন। একবার, দুইবার, তিনবার। আর বললেন, ‘আমি জিতেছি।’ ‘কিভাবে?’, জিজ্ঞাসা করলেন কার্তিক। তখন গণেশ বললেন, ‘তুমি ঘুরেছ ‘এই পৃথিবী’ আর আমি ঘুরেছি ‘আমার পৃথিবী’। আর কী?’

আপনি যদি এই ‘এই পৃথিবী’ আর ‘আমার পৃথিবী’র পার্থক্য বুঝতে পারেন, তাহলে আপনি পার্থক্য বুঝতে পারবেন বাস্তবতা আর পুরানকথার। ‘এই দুনিয়াটা’ বস্তুনিষ্ঠ, যৌক্তিক, সার্বজনীন, সত্যনির্ভর, বিজ্ঞানসম্মত। আর ‘আমার দুনিয়াটা’ মনঃকল্পিত, আবেগগত, ব্যক্তিগত। এটা অনুধাবন, ভাবনা, অনুভব, স্বপ্ন। এটাই সেই বিশ্বাস ব্যবস্থা, যা আমরা বহন করি। এটাই সেই পৌরানিক এলাকা, যেখানে আমরা বাস করি।

‘এই পৃথিবীটা’ আমাদের বলে, কিভাবে এই দুনিয়াটা কাজ করে, কিভাবে সূর্য ওঠে, কিভাবে আমরা জন্মগ্রহণ করি। ‘আমার পৃথিবী’ আমাদের বলে যে, কেন সূয্য ওঠে, কেন আমরা জন্ম নিই। প্রত্যেকটা সংস্কৃতিই নিজেদের বোঝার চেষ্টা করে: ‘কেন আমাদের অস্তিত্ব আছে?’ আর প্রতিটা সংস্কৃতিই নিজেদের জীবনের একটা স্বতন্ত্র বোঝাপড়া নিয়ে হাজির হয়। নিজেদের গড়ে তোলা পুরানকথাগুলো নিয়ে হাজির হয়। বিস্তারিত পড়ুন

লুট হচ্ছে লিবিয়ার প্রত্নসম্পদ

গাদ্দাফীর মৃত্যুর পর এখন বিজয়োল্লাসে মেতে আছে লিবিয়ার বিদ্রোহীরা। প্রতিশোধস্পৃহায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে গাদ্দাফীর দুর্গ-বাসভবন। কিন্তু এসবের ডামাডোলে খুবই দুঃখজনক কিছু ঘটনাও ঘটে চলেছে নবজাগড়নের লিবিয়ায়। বেনগাজির ন্যাশনাল কমার্শিয়াল ব্যাংকে রক্ষিত অমূল্য সব প্রত্নসম্পদ লুট করে নিচ্ছে সুযোগসন্ধানী লুটেরা গোষ্ঠী। বিপুল পরিমাণ সোনা ও রুপার কয়েন হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাকে বিশেষজ্ঞরা দেখছেন ‘প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসের অন্যতম বড় চুরি’ হিসেবে। ‘বেনগাজির সম্পদ’ নামে পরিচিত এই ধনসম্পদের মধ্যে আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেটের আমলের সোনা-রুপার মুদ্রাও আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বেনগাজির ন্যাশনাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের কনক্রিটের ছাদ ভেঙ্গে এই দুর্মূল্য প্রত্নসম্পদ লুট করছে লুটেরারা। সোনা-রুপার মুদ্রার বাইরেও এখানে অনেক ভাস্কর্য, ব্রোঞ্জের মূর্তি, অলঙ্কারাদি, হাতির দাঁত চোরদের হস্তগত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটাকে লিবিয়ার সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের একটা অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে দেখছেন ইতালির প্রত্নতত্ত্ববিদ সেরেনেলা ইসোলি। তিনি বলেছেন, ‘এই প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদগুলো এখনও ভালোমতো পর্যবেক্ষণ করা যায়নি। এগুলোর চুরি যাওয়াটা লিবিয়ার সংস্কৃতির জন্য একটা বিশাল ক্ষতি।’

১৯১৭ থেকে ১৯২২ সালের মধ্যে আর্টেমিসের মন্দির থেকে এই প্রত্নসম্পদগুলো সংগ্রহ করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রোমের ইতালিয়ান আফ্রিকা জাদুঘরে প্রদর্শিত হয় এই ‘বেনগাজি সম্পদ’।  এরপর১৯৬১ সালে আবার লিবিয়ার মাটিতে ফিরিয়ে আনা হয় এই অমূল্য প্রত্নসম্পদগুলো। তারপর থেকে এগুলো বেনগাজির ন্যাশনাল কমার্শিয়াল ব্যাংকে সংরক্ষিত ছিল।— ডেইলি মেইল