Archive for the ‘ প্রযুক্তি ’ Category

অপটোজেনেটিকস: মস্তিস্ক নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার নাকি মনোবিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত?

optogenetics-neuron-640x353গত দশকে বিজ্ঞান জগতের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্র ছিলস্নায়ুবিজ্ঞান। মানুষের মস্তিস্ক সম্পর্কে জানা-বোঝা তৈরি হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় গবেষণাকর্ম ব্যাপকভাবে শুরু হয় ৯০-এর দশকে নতুন এক প্রযুক্তি আবিস্কারের পর। এমআরআই নামক এই প্রযুক্তির কল্যানে আমরা এখন মস্তিস্কের সকল কার্যকলাপের পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাই। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই গত বছরের শেষে প্রথমবারের মতো মানব মস্তিস্কের পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র হাজির করতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এবার স্নায়ুবিজ্ঞানের জগতে হয়তো আরেকটি নতুন বিপ্লব সাধিত হতে যাচ্ছে। যুগান্তকারী এই নতুন প্রযুক্তির ব্যপকতা হতে পারে অনেক অনেক বেশি। ‘অপটোজেনেটিকস’ নামের এই প্রযুক্তিটির মাধ্যমে যে কোন প্রাণীর মস্তিস্কের নির্দিষ্ট কোন কোষ বা নিউরনের কার্যকলাপ ইচ্ছামাফিক বন্ধ বা চালু করা সম্ভব হবে। আক্ষরিক অর্থেই মস্তিস্ক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে এই প্রযুক্তি দিয়ে। আবার রহস্যময় মস্তিস্ক সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়ার পরিধি অনেকখানি বাড়িয়ে দিতে পারে এই প্রযুক্তির ব্যবহার। নতুন দিগন্তের সূচনা হতে পারে মনোবিজ্ঞানে।

অপটোজেনেটিকস এর ভাবনাটা প্রথম আসে ১৯৭৯ সালে। যখন ডিএনএর গঠন আবিস্কারকারী তিন বিজ্ঞানীর একজন ফ্রান্সিস ক্রিক বলেছিলেন যে, মস্তিকের একটা নির্দিষ্ট কোষকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এটা শেখার চেষ্টা করা উচিৎ স্নায়ুয়ুবিজ্ঞানীদের। কল্পনা করুন যে, একটা প্রাণীর মস্তিস্কের কোন কোন নিউরন আপনি চালু অথবা বন্ধ করে দিতে পারছেন, বাইরে থেকে। শুনে মনে হচ্ছে যেন, একটা জলজ্যান্ত প্রাণীকে রোবট বানিয়ে ফেলার মতো বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মতো। তাই না? কিন্তু ৩০ বছর পরের কথা কল্পনা করুন, হয়তো এই অপটোজেনেটিকসের অস্তিত্বটাই হবে বাস্তবতা।
বর্তমান সময়েই আমরা কোন প্রাণীর মস্তিস্কে কিছু ছোট ইলেকট্রোড বসিয়ে তার স্নায়ুগুলোকে উদ্দীপ্ত করতে পারি। এটা করা হয় তড়িৎপ্রবাহের মাধ্যমে। খুবই ছোট, সুক্ষ ইলেকট্রোডও আমাদের কাছে আছে। কিন্তু এগুলো দিয়ে কাজ করাটা খুবই নির্দয়ের মতো ব্যাপার হয়ে যায়। ক্রিক অনুমান করেছিলেন যে, আলোকরশ্মি ব্যবহার করে এই কাজটা করা যায়। সেটাই সত্যি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপটোজেনেটিকস প্রযুক্তিতে প্রথমে কোন প্রাণীর মস্তিস্কে একটা ফাইপার অপটিক যন্ত্র স্থাপন করা হয়। তারপর সেখান থেকে আলোকরশ্মি পাঠিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয় মস্তিস্কের নির্দিষ্ট কোন নিউরনকে।
কিন্তু শুধু মস্তিস্কে আলোকরশ্মি নিক্ষেপ করতে পারাটাই যথেষ্ট নয়। এই পদ্ধতিতে কাজ করতে গেলে প্রথমেই নিউরনগুলোকে নতুনভাবে বিন্যস্ত করতে হবে যেন তারা আলোক সংবেদী হয়ে ওঠে। কারণ সাধারণ অবস্থায় মানুষের নিউরণে এই আলোক সংবেদী প্রোটিনের উপস্থিতি থাকে না। এই অধ্যায়ের কাজটা সম্ভব হয়েছে নতুন ধরণের এই প্রোটিনের বিস্ময়কর আবিস্কারের পর। এই প্রোটিন ব্যবহার করে নিউরনগুলোকে আলোক সংবেদনশীল করে তোলা সম্ভব, যেন তাদেরকে চালু বা বন্ধ করা যায়।
ফলে এবার বিজ্ঞানীদের ভাবতে হলো যে, কিভাবে এই প্রোটিন নিউরনে প্রবেশ করানো যায়। এই অধ্যায়ের কাজটা করা হয় একধরণের জিন প্রকৌশলীর মাধ্যমে। যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘ট্রান্সফেকশন’। এই প্রক্রিয়ায় নিউরনের মধ্যে ‘ভেকটর’ নামক একধরণের ভাইরাসের মতো উপাদান ঢোকানো হয় এবং এর মাধ্যমে নিউরণে কিছু জীনগত উপাদান প্রবেশ করানো হয়। যার ফলে নিউরনগুলো এই আলোক সংবেদী প্রোটিন তৈরি করা শুরু করে।
এই পুরো প্রক্রিয়ার ফসল হচ্ছে একটা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মতো প্রযুক্তি। জীবিত ও হেঁটেচলে বেড়ানো প্রাণীদের মস্তিস্কে থাকবে জীনগতভাবে পরিবর্তিত নিউরন, যেগুলো আমরা নিজেদের ইচ্ছামতো বন্ধ বা চালু করতে পারব। অপটিক ও জেনেটিক্স এর এই সম্মিলিত ব্যবহার থেকেই প্রযুক্তিটি তার নাম পেয়েছে, ‘অপটোজেনেটিকস’।

opto1
কিন্তু যুগান্তকারী এই প্রযুক্তিটা কিভাবে কাজ করে সেটার থেকেও উত্তেজনাকর বিষয় হলো, এই প্রযুক্তিটা দিয়ে কী করা হবে। বিজ্ঞানীরা এটা একারণে উদ্ভাবন করেননি যেন, কোন প্রাণীর মস্তিস্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়া যায়। এমআরআইয়ের মতো তাঁরা এটা বানিয়েছেন মস্তিস্ক সম্পর্কে আরও ভালো বোঝাপড়া তৈরি করার উদ্দেশ্যে। মস্তিকের নির্দিষ্ট কোন নিউরন উদ্দীপিত করে তাঁরা বুঝতে চান যে, কিভাবে এই মস্তিস্ক কাজ করে। ইতিমধ্যেই অপটোজেনেটিকস-এর প্রায়োগিক কিছু ব্যবহার করে সন্তোষজনক সাফল্যও অর্জন করেছেন স্নায়ু ও মনোবিজ্ঞানীরা।
মস্তিস্কে নিউরন কিভাবে ডোপামিন তৈরি করে এবং সেটা কিভাবে পুরস্কার বা আনন্দ পাওয়ার অনুভূতি জোগায় এটা বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা অপটোজেনেজিকসের ব্যবহার করেছেন। এটা ভালোমতো বুঝতে পারলে বিষন্নতা জনিত চিকিৎসায় ঔষুধের কার্যকারীতা সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাবেন চিকিৎসকরা।
আরেকটি ক্ষেত্রে, পার্কিনসন রোগে আক্রান্ত একটি প্রাণী মস্তিস্কের নির্দিষ্ট কিছু কোষ উদ্দীপ্ত করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। যে রোগে মস্তিস্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণের সময় ব্যাঘাত ঘটে। এই গবেষণা থেকে বিজ্ঞানীরা নতুন ধারণা পেয়েছেন রোগটি সম্পর্কে এবং এর চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে।
স্কিজোফ্রেনিয়া এধরণেরই আরেকটি মানসিক ভারসাম্যহীনতা যেখানে মস্তিস্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণ পর্বটি জড়িত। মস্তিকের অভ্যন্তরীণ একটা কার্য্যসাধন পদ্ধতি কাজ না করার কারণেই একজন মানুষ বুঝতে পারে না যে, কাল্পনিক কোন চরিত্রের উপস্থিতি, কারও কণ্ঠস্বর শুনতে পাওয়া এই জাতীয় ভ্রমগুলো বাস্তব না, একান্তই তাঁর কল্পনাপ্রসূত। স্বাভাবিক একটা মানুষের মস্তিস্কে ‘গামা অসকিলেশন’ নামক একটি ক্রিয়ার উপস্থিতি থাকে। স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত মানুষের মস্তিস্কে এটি থাকে ভারসাম্যহীন অবস্থায়। অপটোজেনেটিকস প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই গামা অসকিলেশনের কার্যকলাপ সম্পর্কে আরও পরিস্কার বোঝাপড়া তৈরি করা সম্ভব বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। যার ফলে বিভিন্ন ধরণের মানসিক ভারসাম্যহীনতা সম্পর্কে ভালো ধারণা তৈরি করতে সক্ষম হওয়া যাবে।
অপটোজেনেটিকস প্রযুক্তি দিয়ে আমরা বদলে ফেলতে পারি আমাদের মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসা পদ্ধতি। এমনকি আমরা জানা শুরু করতে পারি যে, কেন আমরা মানুষ হিসেবে এইরকম স্বতন্ত্র হয়ে উঠতে পেরেছি। বুঝে ওঠা শুরু করতে পারি আমাদের মস্তিস্কের অকল্পনীয় ও রহস্যময় কর্মক্ষমতাকে।

প্রযুক্তি জগতের পেটেন্ট যুদ্ধ

বর্তমানের প্রযুক্তি জগতে একটা যুদ্ধই শুরু হয়ে গেছে বলা যায়। আর এই যুস্ত্রের প্রধান অস্ত্র হিসেবে গণ্য হচ্ছে মেধাসত্ব আইন বা পেটেন্টকে। ব্যবসায়িকভাবে মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে এই মেধাসত্ত্বের অধিকার। আদর্শিকভাবে, উদ্ভাবকদের স্বীকৃতি প্রদান করাই পেটেন্ট বা মেধাসত্ব আইনের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হলেও বর্তমান প্রযুক্তি দুনিয়ায় এগুলো কাজ করছে গুগল, অ্যাপল, মাইক্রোসফট, ইয়াহুর মতো বড় বড় কর্পোরেশনগুলোর গোলা-বারুদ হিসেবে। আর এই যুদ্ধে খোদ উদ্ভাবনী প্রক্রিয়াটাই সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পেটেন্ট বিশেষজ্ঞরা। বিস্তারিত পড়ুন

ফেসবুকে থাকবে পুরো জীবনের কাহিনি!

আরও সহজে পরিচালনা করা যাবে—এমন প্রতিশ্রুতি নিয়েই নতুন একটা চেহারা হাজির করেছিল সামাজিক নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট ফেসবুক। ইন্টারনেট জায়ান্ট গুগলের নতুন নেটওয়ার্কিং সাইট গুগল প্লাসের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতেই ফেসবুকের এই নতুন চেহারা দাঁড় করানো হয়েছে বলে অনুমান করেছিলেন অনেকে। তবে ফেসবুকের এই নতুন চেহারা, আরও বড় একটা পরিকল্পনার অংশ মাত্র। নতুন চেহারার ফেসবুকে এখন প্রতিটি ব্যবহারকারীর পূর্ণাঙ্গ জীবনকাহিনি লিপিবদ্ধ করার ব্যবস্থা করেছে সাইটটি। গতকাল সান ফ্রান্সিসকোতে ফেসবুকের বার্ষিক কনফারেনসে ‘টাইমলাইন’ নামের এই নতুন ফিচারটি যোগ করার ঘোষণা দিয়েছেন সাইটটির প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ।

ব্যবহারকারীর পূর্ণাঙ্গ দিনলিপি ফেসবুকে সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যেই এই ‘টাইমলাইন’ ফিচারটি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তাঁদের সারা জীবনের প্রতিটি ঘটনাই দিন-মাস-বছর ধরে লিপিবদ্ধ করতে পারবেন। শুধু বর্তমান সময় থেকেই নয়, ব্যবহারকারীরা যুক্ত করতে পারবেন তাঁদের শৈশব, কৈশোরের দিনগুলোর কথাও। বলা ভালো, জন্মের পরমুহূর্ত থেকেই। তাঁরা অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন নির্দিষ্ট বছরে বা সময়ে তাঁদের জীবনের স্মরণীয় মুহূর্তের ছবি, ভিডিও। পরবর্তী সময়ে কোনো তথ্য মুছে ফেলা বা বাড়তি তথ্য সংযোজনের সুযোগও থাকবে এই ফেসবুক টাইমলাইনে। জুকারবার্গের ভাষায়, ‘একটা ওয়েবপেজের মাধ্যমেই আপনি বলতে পারবেন আপনার পুরো জীবনের কাহিনি।’— টেলিগ্রাফ

কার্বন-নিরপেক্ষ গুগল!

ইন্টারনেট জগতের একটা অবিচ্ছেদ্য নাম গুগল। বিশ্বজোড়া ব্যাপক জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিয়ে ২০০৬ সালে অক্সফোর্ড ডিকশনারীতেও নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে ভার্চুয়াল জগতের এই অগ্রণী প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু গ্রাহককে সার্চ ইঞ্জিন, মেইল, ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সেবাগুলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য অবিশ্বাস্য পরিমাণ বিদ্যুত্ খরচ করতে হয় গুগল কর্পোরেশনকে। যা দিয়ে প্রায় এক থেকে দুই লাখ লোকের একটা শহর খুব অনায়াসেই চালানো যায়। গতকাল গুগল গ্রীন ওয়েবসাইটে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। তবে আরও বেশি পরিমাণ বিদ্যুত্ উত্পাদন করে নিজেদের ‘কার্বন-নিরপেক্ষ’ তকমাটাও টিকিয়ে রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্টের এই প্রতিষ্ঠানটি।

তথ্যানুসারে দেখা যায়, গুগলের ডাটা সেন্টারে প্রায় ২৬০ মিলিয়ন ওয়াট বিদ্যুত্ খরচ হয়। যা দিয়ে উটাহর রাজধানী সল্ট লেক সিটির মতো একটা শহর অনায়াসে চালানো যায়। গুগলে ১০০ বার সার্চ দিলে যে পরিমাণ বিদ্যুত্ খরচ হয়, তা দিয়ে ৬০ ওয়াটের একটা বৈদ্যুতিক বাতি প্রায় ২৮ মিনিট জ্বালিয়ে রাখা যায়। তিন দিন ধরে ইউটিউব ভিডিও দেখার ফলে যে পরিমাণ বিদ্যুত্ ব্যবহার হয়, তা দিয়ে আস্ত একটা ডিভিডি-ই তৈরি ও সরবরাহ করা যায়। তবে অন্যান্য সাধারণ ডাটা সেন্টারের থেকে তারা অনেক কম বিদ্যুত্ খরচ করে বলে দাবি করেছে গুগল। এছাড়াও বাড়তি অনেক সবুজ শক্তি (১.৭ গিগাওয়াট) উত্পাদন করেও তারা এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের সরবরাহ বজায় রাখছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রাযুক্তিক অবকাঠামো বিভাগের প্রধান হোজলে। গতকাল একটি ব্লগপোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা বিদ্যুত্ খরচ কমানোর জন্য অনেক পরিশ্রম করছি। একমাসের জন্য গুগলের সেবাগুলো সবাইকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের সার্ভারগুলো যে পরিমাণ বিদ্যুত্ ব্যবহার করে, তা অন্য সার্ভারের তুলনায় অনেক কম। এটা প্রতিটা ব্যবহারকারীর জন্য একটা বাল্ব প্রায় তিন ঘন্টা জ্বালিয়ে রাখার সমান।’

বৈশ্বিক উষ্ণতা ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে ২০০৭ সালে নিজেদেরকে কার্বন-নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা দেয় গুগল। তবে ১৯৯৮ সালে যাত্রা শুর’ করার পর এবারই প্রথমবারের মতো নিজেদের বিদ্যুত্ ব্যবহারের পরিমাণ প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যে পরিমাণ বিদ্যুত্ তারা খরচ করে তারচেয়ে অনেক বেশি পুনর’ত্পাদনশীল শক্তিও তারা উত্পাদন করে বলে দাবি এই ইন্টারনেট জায়ান্টদের। হোজলে আরও বলেছেন, ‘ক্যালিফোর্নিয়ায় গুগলের প্রধান অফিসের কাছে যে সৌরশক্তিও প্যানেলটি আছে, তা দিয়ে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ বাড়িতে বিদ্যুত্ সংযোগ দেওয়া সম্ভব। আমরা নতুন ধরণের সার্ভারও গড়ে তুলছি, যেটা অন্যান্য ডাটা সেন্টারগুলোর তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুত্ খরচ করবে। ফিনল্যান্ডের হামিনাতে নতুন দুইটি ব্যবস্থা এই সপ্তাহেই চালু হবে। এখানে বিদ্যুত্ খরচ কমানোর জন্য বিশেষ ধরণের শিতলীকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।’— ডেইলি মেইল

আসছে মস্তিস্কসদৃশ কম্পিউটার চিপ!

মানুষের মতো কোন কিছু শিখে নেওয়ার ক্ষমতা আছে কম্পিউটারেরও। কিন্তু মানুষের মস্তিস্কের মতো করে চিন্তাভাবনা করে কাজ করতে পারবে এমন কম্পিউটার তৈরি করা সম্ভব হয় নি এখনও। কারন মস্তিস্কের আদলে কম্পিউটার বানানোর কাজটা একই সাথে প্রাযুক্তিক ও মনস্তাত্বিক। তাই এটা করতে গিয়ে বার বার সীমাবদ্ধতার মধ্যেই পড়েছে কম্পিউটার ও মস্তিস্ক বিজ্ঞান। তবে সম্প্রতি এই দুই জগতের মেলবন্ধন ঘটাতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কমিপউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইবিএম কর্পোরেশন। মস্তিকের আদলে কম্পিউটার তৈরির কাজে অনেক অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির গবেষকরা। ঘোষণা করেছেন যে, তাঁরা নতুন ধরণের কম্পিউটার চিপ বানাতে সক্ষম হয়েছেন, যা মানুষের মস্তিস্কের মতোই কাজ করবে।

প্রায় ১০০ জন গবেষকের টানা ছয় বছরের নিরলস প্রচেষ্টার পর এই নতুন চিপটি বানানোর কাজে অনেকখানি এগিয়ে গেছে আইবিএম। এখন পর্যন্ত এই গবেষণায় খরচ হয়েছে প্রায় ৪১ মিলিয়ন ডলার। নতুন এই যুগান্তকারী প্রযুক্তিটিকে ‘সৃজনশীল কম্পিউটিং’ বলে আখ্যায়িত করেছেন আইবিএমের গবেষকরা। নব আবিস্কৃত এই চিপটি মস্তিস্কের নিউরন ও সিনাপসের মতো কাজ করবে। যার ফলে পূর্ব পরিচিত নয়, এমন তথ্যের সঙ্গেও খাপ খাইয়ে নিতে পারবে এই চিপ ব্যবহারকারী কম্পিউটার। আইবিএমের গবেষক গুইলিও টোটোনি বলেছেন, ‘আগে থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয় নি এমন কোন প্রোগ্রাম বা তথ্যের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েও কাজ করতে পারবে এই চিপটি। কিন্তু চিপটা কী কাজ করছে, এটা গুরুত্বপূর্ণ না। আমাদের লক্ষ্য করতে হবে এটা কাজটা কী পদ্ধতিতে করছে, সেইদিকে।’

তবে নতুন এই চিপটি গবেষণাগার থেকে বেরিয়ে জনসমক্ষে আসতে আরও অনেক সময় লাগবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। অবশ্য এই গবেষণার ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ যে অতিক্রম করা গেছে, এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই কারোরই। আইবিএমের এই প্রকল্পের প্রধান গবেষক ধর্মেন্দ্র মোধা বলেছেন, ‘পুরো ব্যাপারটা আমরা ‘যদি হয়’ থেকে ‘এবার কী’-তে নামিয়ে এনেছি। শুরুতে অনেক সন্দেহ-সংশয় থাকলেও আজ আমরা প্রমাণ করেছি যে, এটা সত্যিই সম্ভব। সামনে আমাদের হয়ত আরও অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হবে। কিন্তু প্রথম ধাপের কাজটা আমরা সফলভাবেই শেষ করেছি।’— ইকোনমিক টাইমস