মুক্ত-বিশ্ববিদ্যালয় নাকি মুক্ত-বাজার?

গত ২০ জানুয়ারী থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ছিল বর্ধিত বেতন-ফি প্রত্যাহার ও সান্ধকালীন বাণিজ্যিক মাস্টার্স কোর্স চালুর সিদ্ধান্ত বাতিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্যিকীকরনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। কোনো আন্দোলনে এত বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ বহুদিন পর দেখা গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে ১ ফেব্রুয়ারী বর্ধিত ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি সাময়িকভাবে স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু শুধু স্থগিত না, সিদ্ধান্তটা পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং সান্ধকালীন মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। এই কয়দিন ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ধৈর্য্য ধরে মোকাবিলা করছিল নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি’। কিন্তু এবার ভেঙ্গে গেল তাদের ধৈর্য্যর বাঁধ। বেরিয়ে পড়ল সেই চিরাচরিত নিপীড়ণমূলক চেহারা। এক দিন পরেই শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লেলিয়ে দেওয়া হলো পুলিশ আর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের। প্রকাশ্যে বন্দুক-পিস্তল নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হলো আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী আর প্রশাসনের পেটোয়া বাহিনী। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আহত করা হলো শতাধিক শিক্ষার্থীকে। আর চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হলো বিশ্ববিদ্যালয়।

8_1
ইতিমধ্যে পত্রপত্রিকা-টেলিভিশন মারফত গোটা জিনিসটা যখন জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হলো, তখন দেখা গেল মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সমাজের বৃহদাংশই, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজটা কী, সেটাই প্রায় ভুলতে বসেছে। আলু-পটলের মতো শিক্ষাকেও, মুক্ত জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রকেও এখন ফেলে দেওয়া হয়েছে পণ্যের কাতারে। ফলে এই যুক্তি অহরহই শুনতে পাওয়া যায় যে, ‘বেতন তো বাড়বেই। পাঁচ বছর আগে যেই জিনিসের দাম ছিল দুই টাকা এখন সেটা দশ টাকা। সেই তুলনায় তো বাড়েই নি বলা চলে।’ বা ‘সান্ধকালীন কোর্সটা তো কতজনকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে, ফলে ক্ষতি কী? বরং ভালোই তো।’ আর যেভাবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বাড়ছে, গোটা সমাজটাই যখন শুধু কেনাবেচার উপরেই চলছে, তখন এমনটা হওয়াই যে স্বাভাবিক, তাতে অবাক হওয়ারও আসলে কিছু নাই। ফলে একটা দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নামের সায়ত্ত্বশাসিত বস্তুটা আছে কেনÑ এই প্রশ্নটাই এখন তোলার দরকার।

‘শিক্ষা-ব্যবসা, একসাথে চলে না’
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে খেটে খাওয়া মানুষের করের টাকায়। একদম গোড়ায় দেখলে দেখা যায় যেটা আসলে কৃষক-শ্রমিকদের প্রত্যক্ষ শ্রমের ফসল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্নে এই মানুষগুলোর শ্রম-ঘামের কথা শুরুতেই মাথায় রাখতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সমাজকে এমন ধরণের জ্ঞানের যোগান দেওয়া যা দিয়ে উন্নতি-অগ্রগতির পথে হাঁটা যাবে। যে জ্ঞান সহায়ক হবে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা কাজে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সেই সমাজ-প্রগতি অর্জনের জন্য জ্ঞানচর্চা করার কথা, নতুন নতুন জ্ঞান সৃজন করার কথা। শুধু চাকরি-বাকরি পাওয়ার জন্য একটা সার্টিফিকেট প্রদান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ না। প্রদান বলছি কেন, এখন তো তারা সার্টিফিকেট বেচতেই শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু জ্ঞান-বিদ্যা তো বিক্রির জিনিস না। শিক্ষকদের যদি উচ্চশিক্ষা না পাওয়াদের জন্য এতই উদ্বেগ থাকে, তাহলে তারা নিয়মিতভাবেই আরেকটা সান্ধকালীন শিফট চালু করুক। সরকারের কাছ থেকে বেশি টাকা দাবি করুক। কিন্তু সেটা না করে, ‘অনেককে সুযোগ করে দিচ্ছি’, এই মহান দোহাই দিয়ে তারা নগদ নারায়নের পূজা করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়কেও বাজার বানাবেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেতনাবিরোধী এই বাণিজ্যিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অনেকবারই আওয়াজ তুলেছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ‘শিক্ষা-ব্যবসা, একসাথে চলে না’, এই শ্লোগানে এর আগেও অনেকবার মুখরিত হয়েছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। যারই সর্বশেষ সংযোজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্দোলন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈশ/সান্ধকালিন বা বৈকালিক; কোনো ধরণের বাণিজ্যিক কোর্সই গ্রহণযোগ্য না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই দাবিটাই তুলেছিলেন। তারা কোনো ‘নৈরাজ্য’ করছিলেন না। শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের দাবিদাওয়ার কথা তুলে ধরছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর আর্থিক ভার রাষ্ট্রকেই নিতে হবে

রাষ্ট্র যদি বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর ব্যয়ভার পরিপূর্ণভাবে বহন না করে আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে পা দিয়ে সেই টাকাটা তুলবার চেষ্টা করা হয়, তাহলে সেটাই রীতিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের ছেলেমেয়েদের তখন সেই টাকাটা জোটানোর সামর্থ্য নাও থাকতে পারে। ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বড়লোকীকরণ অনেক ক্ষেত্রেই শুরু হয়ে গেছে। কয়েক বছর আগেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা এমন শিক্ষার্থীদের দেখা যেত, যাদের আর্থিক অবস্থা খুবই অসচ্ছল। ছেলে বা মেয়েকে শিক্ষিত করার বাসনা নিয়ে অতি কষ্টে অর্থের যোগান দিতেন তাদের বাবা-মা। এখন এমন ঘরের ছেলেমেয়েদের খুব বেশি দেখা যাবে কিনা, সন্দেহ আছে। নতুন করে বেতন-ফি বাড়ানো হলে সংখ্যাটা আরও অনেক কমে যাবে। বেতন-ফি না বাড়িয়ে রাষ্ট্রকেই বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করতে বলা হোক না কেন? শিক্ষকদের তো উচ্চকণ্ঠে বলা উচিৎ যে, অনুৎপাদনশীল খাতগুলোতে বরাদ্দ কমিয়ে শিক্ষাখাতে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হোক। কিন্তু সেই দাবি, এমনকি নিজেদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিও তারা কখনো তোলেননি। তারা রাষ্ট্রক্ষমতার পদলেহন করে চলেছেন; শিক্ষার্থীদের বলির পাঁঠা বানিয়ে। শিক্ষার্থীরা যখন ক্রমাগত চিপা খেতে খেতে ফুঁসে উঠছেন, তখন তারা পুলিশ-পেটোয়া বাহিনী নামিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টাই দিচ্ছেন বন্ধ করে। কিন্তু এভাবে আর কত?

আর কত শিবির জুজু?
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা চালিয়েছে সরকার সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হতে দেখা গেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের। পুলিশ সেসময় পাশে দাঁড়িয়ে থেকেও তাদের কিছু বলেনি। ছাত্রলীগের ভাষ্যমতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে নাকি শিবির ঢুকে গিয়েছিল। এই শিবির জুজু দেখানো হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে পচিয়ে ফেলা হয়েছে এই শিবির জুজ দেখিয়ে। শিবির দমনের নাম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাধে দুর্নীতি, দলীয়করণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অবাধে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি করে এসেছে ছাত্রলীগ। দেশের অন্যতম প্রধান একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেসব ন্যাক্কারজনক ঘটনার কথা অনেকেই জেনেছেন পত্রপত্রিকা মারফত। নতুন করে বলার কিছু নেই। আর এসবের প্রতিরোধ করতে গেলে বরাবরই দেখানো হয়েছে শিবির জুজ। এটা যে নিজেদের দুর্নীতি-লুটপাট আড়াল করার জন্যই করা হয় সেটা বুঝতে কারো আর বাকি নেই। হাজার হাজার শিক্ষার্থী, যারা নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচানোর জন্য প্রতিবাদে সামিল হয়েছে, তারা শিবির না। শিবির প্রতিরোধের জন্য ছাত্রলীগ প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে মহড়া দেয় নি। প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজস করে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বানচাল করার জন্যই চড়াও হয়েছিল প্রশাসনের গুন্ডারা। শিবির প্রতিরোধ তো দূরে থাক, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগই যদি শিবিরের সঙ্গে হাত মেলায় তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।

‘শিবঠাকুরের আপন দেশে/আইনকানুন সর্বনেশে’!
গুলি খেয়ে, স্বল্প সময়ের নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেও নিস্তার পাচ্ছে না আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এবার তাদের ওপর নেমে আসছে আইনি সন্ত্রাসের খাঁড়া। বেআইনি সমাবেশ, মারামারি, সরকারি কাজে বাধাদান ও ভাঙচুরের অভিযোগে চারটি মামলা করেছে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এমনকি প্রকাশ্যে সন্ত্রাস করা ছাত্রলীগও একটা মামলা করেছে তাদের মিছিলে হামলা করার জন্য। সবগুলো মামলায় নামে-বেনামে অসামী করা হয়েছে ৭৯০ জন শিক্ষার্থীকে। মামলায় যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের পরিচয়টুকু পর্যন্ত জানাচ্ছে মতিহার থানা। তদন্তের স্বার্থে নাকি ক্ষতি হবে। বুঝতে কিছুই বাকি থাকে না যে, ‘শিবিরের চর’, ‘চক্রান্তকারী’, ‘বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টারত বিশেষ মহল’Ñ ইত্যাদি নাম দিয়ে এখন আইনি জুলুম নেমে আসবে আন্দোলনকারীদের ওপর। পুলিশ তাদেরকে খুঁজে খুঁজে বের করবে যারা উচ্চকণ্ঠে আওয়াজ তুলেছিলেন ন্যায়ের পক্ষে। আর বেশুমার ঘুরে বেড়াবে অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়া সন্ত্রাসীরা। এ তো সেই ‘শিবঠাকুরের আপন দেশে/আইনকানুন সর্বনেশে’!
বরাবরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের মতো করে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। হাস্যকর হলেও সত্যি যে বাংলাদেশে স্বৈরশাসন থাকার সময় পর্যন্তই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-সংসদ চালু ছিল। ১৯৯১ সালে ‘গণতান্ত্রিক’ সরকার আসার পর থেকেই সেটা উবে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে অংশগ্রহণের একমাত্র পথ, ছাত্র সংসদ আর চালু থাকেনি। ফলে নিজেদের দাবির কথাটা জানাতে হলে এভাবেই কাসরুম ছেড়ে রাস্তায় নামতে হয় শিক্ষার্থীদের। নিজেদের স্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে এভাবে আন্দোলন করা ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় থাকে না। আর এই আন্দোলন করতে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনোরকম সহিংস আচরণ করেনি। মারামারি-ভাঙচুর করেনি। বরং তারাই হুমকিধামকি-মারধোরের শিকার হয়েছে, গুলি খেয়েছে। কিন্তু উল্টো এখন তাদেরই পড়তে হবে নানাবিধ নিপীড়ণের মধ্যে।

বিশ্ববিদ্যালয়ই আশা
বাংলাদেশের ইতিহাসে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বরাবরই একটা বাতিঘর হিসেবে কাজ করেছে। হাজারো অবক্ষয় সত্ত্বেও এখনো ন্যায়-সাম্য-স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়। এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিপরায়ন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণা আছে বলেই সমাজে কিছু আশা আছে।
ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ চরমভাবে বাড়িয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত পরিসর অনেকটাই সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে। রাষ্ট্রকর্তৃত্বের শুঁড় আষ্টেপৃষ্টে পেঁচিয়ে ধরেছে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়কে। যার পরিণতি হিসেবে আমরা প্রতিনিয়তই বিশ্ববিদ্যালয়ের লজ্জাজনক সব দুর্নীতি-লুটতরাজের খবর পত্রপত্রিকায় দেখি। এত কিছুর পরও সমাজকে প্রগতির পথে নিয়ে যেতে পারে এমন একটা প্রতিষ্ঠান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া একটা ‘তুচ্ছ ঘটনা’ই কিন্তু কাঁপিয়ে দিয়েছিল মহা দাপুটে সেনা সমর্থিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভিত। খুব সাম্প্রতিক কালেরটা বললাম। আগে আরও কত বড় বড় ঘটনা ঘটেছে সেটা সবাই জানেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে আরও একবার সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার পক্ষে আওয়াজ তুলেছেন, সেজন্য তাদেরকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধকোর্স বিরোধী আন্দোলন আরও একবার সুযোগ করে দিয়েছে সমাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা কী হবে সেটা নিয়ে কথা তোলার। বিশ্ববিদ্যালয়ে কী শুধু সার্টিফিকেট বিক্রি হবে? জামাত-শিবির দমনের নামে অবাধে দুর্নীতি-দলীয়করণ, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজী হবে? নাকি এটা স্বাধীন-সায়ত্ত্বশাসিত একটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে? সমাজকে প্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করবে? তেমনটা করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনভাবে জ্ঞানচর্চা-অনুশীলনের সুযোগ থাকতে হবে। কোনোভাবেই সেটাকে পুলিশি প্রহরায় পরিচালিত একটা বাজার বানানো যাবে না।

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

%d bloggers like this: