দৌড় সংস্কৃতির ব্যাখ্যা? ঠিক হলো কী?

১.
ফিচারের শুরুটা হয়েছে খুবই মজার একটা গল্প দিয়ে। ‘দৌড় সংস্কৃতি’টা যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন হাস্যকর ঘটনার জন্ম দেয়, সেটা পাঠককে শুরুতেই বলার জন্য। এরপর ‘দৌড়-সংস্কৃতি’ বলতে এখানে আমি কী বলতে চেয়েছি সেটা বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। জিনিসটার একটা সাধারণ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
২.
এই ‘দৌড় সংস্কৃতি’, ‘দৌড় দেওয়ার রেওয়াজ’টা যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিপত্তিও ডেকে আনে সেটার উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। এই দৌড় সংস্কৃতির একটা বড় বিপত্তির কথা বলা হয়েছে প্রথমেই। দর্শকরা খেলার পুরো পরিসি’তি না বুঝেই যে ‘দৌড়’টা দিয়ে ফেলল, তার ফলে অনেক সময় নষ্ট হয়ে গেল। এই সময়টা কিন্তু আমাদের বাস্তব জীবনে অনেক জরুরি একটা ব্যাপার। তাই না? এই ব্যাপারটা অবশ্য অনেকে সমর্থনও করতে পারেন। ‘মানুষের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ’, ‘খেলাটার সঙ্গে মানুষের সম্পৃক্ততা’ ইত্যাদি বিষয়-আশয়ের দিক দিয়ে অনেকেই এটাতে লাইক দিতে পারেন। কিন্তু ‘সম্পৃক্ততা’টা একটু মাখামাখি পর্যায়ে চলে গেলে সেটা খুব সুফল বয়ে আনে কী? এই অতি আবেগের আতিশয্যটা কখনো কখনো বিপত্তিই ডেকে আনে বলে আমার ধারণা। আমরা বোধহয় নিজেদের প্রতিদিনের জীবন দিয়েই এটা টের পাই। ফলে শিরোনামটা দেওয়া হয়েছে ‘দৌড় সংস্কৃতির বিপত্তি। বিপত্তিটা যে সত্যিই ঘটে সেটা বর্ণনা করা হয়েছে পরবর্তীতে।
৩.

দ্বিতীয় লক্ষ্যণীয় বিষয়টা হলো ডেনিস লিলি আর জেফ টমসনের কীর্তি। এটাও কিন্তু একধরণের ‘দৌড় সংস্কৃতি’ই বটে। কোন নিয়ম নীতির বালাই নাই, যতো পারো শুধু দৌড়াও। যে যত বেশি দৌড়াতে পারবে, সে তত বেশি ‘রান’ আশা করতে পারবে। আপনি চাইলে এখানে রানের জায়গায় সাফল্য, টাকাপয়সা, মান-যশ ইত্যাদি পছন্দসই শব্দ বসিয়ে নিতে পারেন। লিলি কিন্তু এই কাজটাই করেছে। এবং আরেকটা খুবই খেয়াল করার মতো বিষয় যে, তাঁরা এই ‘সারা দুপুর ধরে’ দৌড়াচ্ছেন একটা ভুলবোঝাবোঝির সুযোগ নিয়ে, অন্যায় করে, নিয়ম-নীতির পরোয়া না করে। আমরাও কী ‘এখন’ এই জিনিসটাই করছি না? আমরাও কী একটা ‘দৌড় সংস্কৃতি’রই চর্চা করছি না? ‘চাই চাই আরো চাই’ করছি না?, ‘এ দিল মাঙ্গে মোর’ করছি না? ফলে এখানেও কিন্তু একটা বড় ধরণের বিপর্যয় ঘটে যাচ্ছে বলে আমার ধারণা।
৪.
এবং মজার ঘটনা হলো, শেষপর্যন্তু লিলির ঐ ‘দৌড়’গুলো কিন্তু গোণায় আসেনি। তারা ১৭ রানের মতো দৌড়ে চার রানই পেয়েছেন। বাকিগুলো বৃথা, পণ্ডশ্রম। আমাদেরও কী সেরকমই ঘটছে? আমাদের এই পণ্ডশ্রমের হতাশা বাড়ছে? সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে?
৫.
শেষ লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো কেইথ বয়েসের বুদ্ধিটা। তাঁর পরিস্থিতি আঁচ করার ক্ষমতা। খেলা শেষের পরিস্থিতি সম্পর্কে অনুমান করতে পারার ক্ষমতা। এটা তার বেশি ছিল বলেই তিনি নিজের জুতোজোড়া বাঁচাতে পেরেছিলেন। এখান থেকেও কী আমরা কোন ইঙ্গিত পেতে পারি?

  1. ফেব্রুয়ারি 15th, 2011

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

%d bloggers like this: